চিমসে উঠল মধ্যপ্রাচ্য: ইসরায়েলের ‘রাইজিং লায়ন’ অভিযানে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্যভ্রষ্ট
![]() |
'অপারেশন রাইজিং লায়ন'-এর সময় ইরানে ইসরায়েলি হামলার একটি কল্পিত দৃশ্য। |
তেহরানে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল মধ্যপ্রাচ্য
গতকাল শুক্রবার ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে এক বড়সড় সামরিক অভিযান চালিয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে। লক্ষ্য ছিল দেশটির পারমাণবিক স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানা এবং সামরিক কমান্ড সেন্টার। ইসরায়েল জানায়, এই অভিযান হচ্ছে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা রোধে একটি পূর্ব পরিকল্পিত পদক্ষেপ।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানসহ নাতান্জ অঞ্চলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। নাতান্জেই রয়েছে ইরানের অন্যতম প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র।
নিহত সেনাপতি ও বিজ্ঞানীরা
ইরানের অভিজাত সামরিক বাহিনী ‘রেভলিউশনারি গার্ডস’-এর প্রধান হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন বলে জানায় ইরানের গণমাধ্যম। এছাড়া পারমাণবিক গবেষক ফেরাইদুন আব্বাসি ও মোহাম্মদ মেহদি তেহরাঞ্চিও ইসরায়েলি হামলায় মারা গেছেন।
তেহরানের এক আবাসিক এলাকাতেও বিমান হামলা হয়, যাতে কয়েকজন শিশু নিহত হয় বলে খবর দিয়েছে ইরানের সংবাদ সংস্থা ইরনা।
ইসরায়েলের অবস্থান ও বিবৃতি
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় বলেন,
“এটি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য একটি নির্ধারক মুহূর্ত। আমরা ইরানের হুমকি রুখতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি এবং যতদিন প্রয়োজন অভিযান চলবে।”
তিনি জানান, ইসরায়েল ‘রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে ডজনখানেক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। একইসঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ ইরানের ভিতরে গোপন অভিযানও চালিয়েছে।
ইরানের প্রতিক্রিয়া: প্রতিশোধের ঘোষণা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনি এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের এই হামলাকে "রক্তাক্ত অপরাধ" আখ্যা দিয়ে বলেছেন,
“ইসরায়েল এই ঘৃণ্য হামলার জন্য কঠিন ও তিক্ত পরিণতির মুখোমুখি হবে।”
আঞ্চলিক উত্তেজনা ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর ইসরায়েল তার পুরো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে এবং বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই অভিযানে কোনও অংশ নেয়নি। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, "আমরা আশা করি ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করেই আলোচনায় ফিরবে।"
বিশ্ববাজারে প্রভাব ও শঙ্কা
এই উত্তেজনার জেরে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে অস্থিরতা বেড়েছে। তেলের দাম হঠাৎ করে ৯ শতাংশ বেড়ে গেছে। অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন, এই ঘটনাটি আরও বড় সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।