সুদানের আল-ফাশিরে অবরোধে নিহত ৭০০-এর বেশি মানুষ, জানালেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান

সুদানের একটি শরণার্থী শিবির যেখানে শিশু ও বয়স্করা সংগ্রামের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে
সুদানের আল-ফাশিরে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত শরণার্থী শিবিরের চিত্র
জেনেভা, ২০ ডিসেম্বর, (গ্লোবাল টাইমস বাংলা): সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের আল-ফাশির শহরে মে মাস থেকে চলা সংঘর্ষে ৭০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক। তিনি বেসামরিক জনগণের ওপর এই অবরোধ ও লড়াই বন্ধ করার জন্য আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF)-এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মানবিক সংকট: জাতিসংঘের উদ্বেগ

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মে মাস থেকে অন্তত ৭৮২ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ১,১৪৩ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এসব তথ্যের ভিত্তি অংশত স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী এবং আল-ফাশির থেকে পালিয়ে আসা লোকজনের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে সংগ্রহ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, "এই ভয়াবহ পরিস্থিতি আর চলতে পারে না। RSF-এর এই অবরোধ দ্রুত শেষ হওয়া উচিত।"

যুদ্ধাপরাধের সম্ভাবনা

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় RSF-এর নিয়মিত গোলাবর্ষণ এবং সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর বারবার বিমান হামলার কারণে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। এই ধরনের হামলাগুলোকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে।

RSF এবং সুদানের সেনাবাহিনী উভয়েই বেসামরিক জনগণকে টার্গেট করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং পরস্পরের ওপর দোষারোপ করেছে।

মানবিক সংকট ও খাদ্যের অভাব

১৮ মাস ধরে চলা সংঘর্ষে সুদানে এক গভীর মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এর মধ্যে আল-ফাশির শহরটি সংঘর্ষের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু।

জমজম শরণার্থী শিবির, যেখানে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন, সেখানে গত দুই সপ্তাহে RSF-এর গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ শিবির ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

বিশেষজ্ঞদের মতে, RSF যদি আল-ফাশিরে বিজয়ী হয়, তবে দারফুর অঞ্চলে জাতিগত প্রতিশোধ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এই সংঘাত বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url